বরিশাল নিউজ
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ পিএম
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি)সামনের সড়কে বাসের নিচে চাপা পড়ে নিহত শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিমের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করে মাইশার নামে নামকরণ করা হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফয়সাল মাহমুদ রুমি আজ শনিবার, ৩ নভেম্বর এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টা ধরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, সিন্ডিকেট মেম্বার, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, র্যাব-৮-এর উপ-অধিনায়ক, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, ডিজিএফআইর আঞ্চলিক প্রধান, বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির ও নারায়ণগঞ্জ বাস মালিক সমিতির নেতারা এবং নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহত শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিমের পরিবারকে বাস মালিক ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এ ছাড়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ পাঁচ লাখ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও পাঁচ লাখ টাকাসহ মোট ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আওলাদ হোসেন বলেন, ‘সমঝোতা সভায় আমরা ক্ষতিপূরণ বাবদ এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা দাবি করেছি। কিন্তু বাসমালিক কর্তৃপক্ষের কথায় আমরা আশাহত হয়েছি। অবশেষে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার সম্মতি জানায় বাসমালিক কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ববি প্রশাসন ও বিআরটিএ পাঁচ লাখ টাকা করে দেবে।’
ববির প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল তা দেওয়ার সক্ষমতা নেই বাসমালিকের। এ জন্য বাস মালিক ১০ লাখ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঁচ লাখ এবং বিআরটিএ পাঁচ লাখ করে টাকা দেবে।’
উপাচার্য ড. সুচিতা শরমিন বলেন, ‘অর্থ তো মানুষের ক্ষতিপূরণ হতে পারে না। তারপরও ট্রান্সপোর্ট মালিক ১০ লাখ টাকা দিতে চেয়েছে। শিক্ষার্থীরা মানবিক কারণে এই অর্থ নিতে সম্মত হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ও বিআরটিএ পাঁচ লাখ করে টাকা দেবে। এ ঘটনায় ঘাতক চালকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি ইনচার্জ মামলা করবেন।’
তিনি স্বীকার করেন শিক্ষার্থীরা মীমের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা দাবি করেছিল। ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণে আপনিও সম্মতি দিয়েছিলেন কি না, এ প্রসঙ্গে উপাচার্য ড. শরমিন বলেন, ‘আমি ছাত্রদের একটা কথাই বলেছি যে এই হত্যার বিচার চাই।’
গত বুধবার,৩০ অক্টোবর রাত ৯টায় ববির সামনে নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস পরিবহনের বাসচাপায় শিক্ষার্থী মাইশা ফওজিয়া মিম নিহত হন। তিনি ববির ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ করলে দক্ষিণাঞ্চলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মিমকে হত্যার অভিযোগ তুলে কর্মসূচিতে নানা দাবি তুলে ধরেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। অবশেষে শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের দীর্ঘ সমঝোতা বৈঠক হয়।
শুক্রবার রাত ১১টায় বাসচালক মো. জামিল হোসেনকে (২৫) পটুয়াখালী মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের খাসেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন