বরিশাল নিউজ, পিরোজপুর
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৮:০০ এএম
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উপজেলার ছোট মাছুয়ায় বলেশ্বর নদীর চরে আটকে থাকা এম.বি শাকিল পরিবহন নামের একটি কয়লাবোঝাই জাহাজে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল মঠবাড়িয়া থানা-পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছয়জন শ্রমিককে অচেনতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ সময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় নাছির হোসেন (৩৫) নামের এক শ্রমিককে। অন্যান্য আহতরা হলেন- জাহাজের মাস্টার আবুল হাশেম (৪৯), ইঞ্জিন চুকানি বিপ্লব (৩৫) বাবুর্চি নিদু মিয়া (৬০), স্কট মো. শান্ত (১৮) ও শাওন (১৭)। আহতদের প্রত্যেকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জাহাজের মাস্টার আবুল হাশেম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মংলা থেকে জাহাজে কয়লাবোঝাই করে ঢাকা গাবতলীর উদ্দেশ্যে রওনা দেই। মোড়েলগঞ্জ থানাধীন সোনাখালী নামক স্থানে নদীতে জাহাজ নোঙর করে ইফতার ও তারাবি নামাজ পড়ে বিশ্রাম করি। হয়তোবা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, এরপর এখানে কীভাবে এলাম বলতে পারি না। কেউ কিছু দিয়ে অজ্ঞান করে এখানে এনেছে।’
জাহাজের স্কট মো. শান্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইফতার করার সময় সোনাখালীর সেখান থেকে দুজন স্কট আমাদের জাহাজে এসেছিল। তারপর কী হয়েছে আমি বলতে পারি না। শুক্রবার দুপুরে আমাদের জাহাজ এখানে চরের সঙ্গে আটকে থাকা অবস্থায় এবং জাহাজের লোকজনের হাত-পা বাঁধা দেখতে পাই। জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করা হয়নি। আমাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল নিয়ে গেছে।’
স্থানীয় ইট ভাটার ম্যানেজার সরোয়ার হোসেন মন্টু মিয়া বলেন, ‘সেহরির খাবার পর নদীর চরে এ জাহাজটি আটকে থাকতে দেখি। ইঞ্জিন চলছে। আমরা ওপর থেকে বারবার চিৎকার করে সমস্যা জানার চেষ্টা করছি, কিন্তু কোনো উত্তর না পেয়ে দুপুরের দিকে ট্রলার নিয়ে জাহাজের কাছে গিয়ে লোকজনের হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে আমার মালিককে জানাই। এরপর পুলিশ ও সাংবাদিকেরা এসে আহতদের উদ্ধারে করে হাসপাতালে নিযে যায়।’
জাহাজের মালিক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘গুইশাখালীতে টোল দেওয়ার পর আমার সঙ্গে জাহাজের কারও কোনো যোগাযোগ হয়নি। সারা রাত আমি জাহাজের সবার নম্বর বন্ধ পাই। আমার জাহাজের পাইলট মোংলা থেকে ওঠার কথা ছিল আর নামবে কাউখালী। কিন্তু সে গুইশাখালীতে নেমে গেছে। কিন্তু কীভাবে এ ঘটনা ঘটল, তা আমি বলতে পারব না। এ ঘটনার সঙ্গে পাইলটের কোনো যোগাযোগ থাকতে পারে।’
মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাকিল সরোয়ার বলেন, ‘বিকেল ৫টার পরে আহত অবস্থায় শ্রমিকদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবার শরীরেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মুকিত হাসান খান বলেন, পুলিশ আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। কয়লার জাহাজটি নিরাপদে রাখা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৫
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন