বরিশাল নিউজ
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৬ এএম
বরিশালের হিজলা উপজেলায় জামাল মাঝি নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে নিজের অনুসারী জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য অভিযোগ করেছেন-জামালকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি তুলেছে জামালের পরিবার। এলাকাটিতে গত ১৫ দিন ধরে দু’গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা-সংঘর্ষ চলছে এর জেরে মামলা ও গ্রেপ্তারের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত করে জড়িতদের শনাক্ত করা হবে।
নিজ বাড়ির সামনে মেঘনা নদীর তীরে সয়াবিন ক্ষেত থেকে শনিবার, ১৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে জামালের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলেছেন হিজলা থানার ওসি জুবাইর। তিনি ধুলখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পালপাড়া গ্রামের আ. কাদের মাঝির ছেলে।
জামালকে নিজের অনুসারী দাবি করে বরিশাল-৪ (মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা) আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ জানান, জামাল ধুলখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তাকে যারা হত্যা করেছে তারা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদের অনুসারী।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, শনিবার, ২ মার্চ জামালের বাড়িতে শাম্মীর অনুসারী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জামাল ঢালীর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। তারা জামাল মাঝিসহ পরিবারের ৭ সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। পরে জামাল মাঝির ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় জড়িত শাম্মীর অনুসারী সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে শুক্রবার, ১৫ মার্চ পেয়ে মারধর করা হয়। ঘটনার পর হিজলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপংকর রায় তার (এমপি পঙ্কজ) অনুসারীদের এলাকা ছাড়া করে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের কারণে সবাই এলাকা ছাড়া হলেও জামাল মাঝি একা ছিল। সকালে তাকে পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে শাম্মীর অনুসারীরা।
জামালের স্ত্রী আঁখি বেগম জানান, বাড়ি না ফেরায় রাত ২ টার দিকে স্বামীর ফোনে কল দিন তিনি। তখন স্বামী জানিয়েছিল ভালো আছে। সকাল ৯ টার দিকে জানতে পারেন স্বামীর মরদেহ সয়াবিন ক্ষেতে পড়ে আছে।
আঁখি বেগমের অভিযোগ- স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ঢালীর নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী জামাল মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। অভিযোগ অস্বীকার করে জামাল উদ্দিন ঢালি বলেন, ‘রাত চারটা পর্যন্ত পুলিশ এলাকায় ছিল। কারা করেছে, তারাই জানে না। আমি কীভাবে জানব। ঘটনাস্থল নির্জন। কে করেছে কেউ দেখেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে একজন কল দিয়ে আমাকে জানায় সয়াবিন ক্ষেতের মধ্যে একটি লাশ পড়ে আছে। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ঘটনাস্থলে চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) আলী আশরাফকে পাঠাই। সে লাশ দেখতে পেয়েছে। পরে পুলিশ গিয়েছে।’ চৌকিদার আলী আশরাফ জানান, চেয়ারম্যান কল দিয়ে তাকে বলেন-জামাল মাঝির বাড়ির সামনে সয়াবিন ক্ষেতের মধ্যে তার লাশ পড়ে আছে। সকাল আটটায় সেখানে গিয়ে লাশ দেখতে পান তিনি। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছেন। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপংকর রায় বলেন, ‘পরিত্যক্ত অবস্থায় লাশ পেয়েছি। কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত করে বলতে পারব হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিল।’
এমপির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে ধুলখোলা ইউনিয়নে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা, পালটা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। থানা ও আদালতে পাঁচটি মামলা করেছে এক পক্ষ অপরপক্ষের বিরুদ্ধে। একজনকে শুক্রবার, ১৫ মার্চ মারধরের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি দুই পক্ষ সশস্ত্র অবস্থায় রয়েছে। তখন দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করা হয়েছে।’ কোনো পক্ষের হয়ে তিনি কাজ করেননি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন