বরিশাল নিউজ
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:৫৮ পিএম
বরিশালের বানারীপাড়ায় ব্রাক্ষ্মণকাঠি গ্রামে গৃহবধূ চম্পা(২২)যৌতুকের কারনে স্বামীর হাতে খুন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৪ জানুয়ারি রবিবার রাত ১১টায় বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চম্পার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী সুমন বেপারী দুই বছরের মেয়ে তানহাকে নিয়ে পলাতক রয়েছে।
তার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে ১৫ জানুয়ারি সোমবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্ত শেষে উপজেলার মহিষাপোতা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে নিহত চম্পার মা রেবা বেগম বানারীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
চম্পার বাবা-মা ও ভাইসহ স্বজনদের অভিযোগ, জামাতা সুমন বেপারী তার ব্রাক্ষ্মণকাঠি গ্রামে সম্প্রতি ৬ শতক সম্পত্তি ক্রয় করেন। ঐ সম্পত্তি ক্রয় করতে গিয়ে সে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ায় তা পরিশোধের জন্য স্ত্রী চম্পাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলেন। মেয়ের সুখের কথা ভেবে চম্পার দরিদ্র বাবা-মা সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে জামাতাকে ১৫ হাজার টাকা দেন। এতে সুমন সন্তুষ্ট না হয়ে স্ত্রীর কাছে আরও টাকা দাবি করেন।
এ নিয়ে তাদের সংসারে কলহ সৃষ্টি হয়। সুমন টাকার দাবিতে গালাগালসহ স্ত্রীকে নানাভাবে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন শুরু করে। ফলে গত ৮/৯ দিন পূর্বে চম্পা শিশু কন্যাকে নিয়ে বানারীপাড়া পৌর শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডে পিতা কুটিয়াল আনোয়ার মল্লিকের বাড়িতে এসে ওঠেন। ঘটনার দিন ১৪ জানুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় সুমন শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে যেতে চাইলে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এ সময় সুমন স্ত্রী চম্পাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর করতে তেড়ে গেলে শ্বশুর-শাশুড়ি তকে নিবৃত করেন। পরে সুমন তার বাড়ি ফিরে যান। সন্ধ্যা ৭ টায় চম্পা তার দুই বছরের শিশু কন্যা তানহাকে নিয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মণকাঠি গ্রামে স্বামীর বাড়ি ফিরে যান। সেখানে যাওয়ার পরে তাদের মধ্যে পুনরায় ঝগড়াঝাটি হয়।
ঐ দিন রাত ১০টায় চম্পাকে অচেতন অবস্থায় তার শাশুড়িসহ প্রতিবেশীরা বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। চম্পার শ্বশুর তৈয়ব আলী বেপারী ও শাশুড়ি আলেয়া বেগমের দাবি ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে চম্পা আত্মহত্যা করেছে। অপরদিকে চম্পার পরিবারের দাবি তাকে মারধর করে হত্যার পরে ঘরের আড়ার সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এদিকে আদরের চম্পাকে হারিয়ে তার পরিবারে বইছে শোকের মাতম। বাবা-মা সহ স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতাল ও এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, চম্পার প্রকৃত মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ইউডি মামলা নেওয়া হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন