মো. শরীফ হোসাইন, ভোলা
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলায় শুক্রবার সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে মাঝারি আকারের বৃষ্টিপাত হচ্ছে থেমে থেমে। সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে ঢেউয়ে সাগর মোহনা এবং মেঘনা এখন উত্তাল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আরিফুল ইসলাম জানান, দৌলতখান মেঘনা নদীর চ্যানেলে জোয়ারের পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগের দিন ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় ভোলার ১০টি নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এ সব রুটে চলাচলকারী যাত্রীসহ পণ্যবাহী ট্রাকের চালকরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ভোলা নদী বন্দরের পরিবহন পরিদর্শক মো: জসিম উদ্দিন জানান, সাগরে নিম্নচাপের কারণে সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর ও নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় মেঘনা নদী উত্তাল রয়েছে। তাই ভোলার ইলিশা-লক্ষ্মীপুর, দৌলতখান-আলেকজান্ডার, তজুমদ্দিন-মনপুরা, মনপুরা-ঢাকা, হাতিয়া-ঢাকা, চরফ্যাশন-ঢাকাসহ অভ্যন্তরীণ ১০টি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার সকাল থেকেই ভোলা-বরিশাল ও ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে ফেরি চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সরেজমিন ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ, সি-ট্রাক ও ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ভোর থেকেই শত শত যাত্রী পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছেন। নারী-পুরুষ ও শিশুরা বৃষ্টিতে ভিজে ৩-৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করে পুনরায় বাড়িতে চলে গেছেন। তবে অনেককেই পারাপারের জন্য ঘাটেই বসে থাকতে দেখা গেছে।
ঘাটে অপেক্ষমাণ মো. আল আমিন, মো. মিজান, ইব্রাহীমসহ অন্য যাত্রীরা জানান, তারা জরুরি কাজে কর্মস্থল চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে এসেছেন। শনিবার আবার কর্মস্থলে যোগদানের কথা রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে লঞ্চঘাটে এসে জানতে পারেন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে লঞ্চ ও সি-ট্রাক বন্ধ রয়েছে। এমনকি ফেরি চলাচলও করছে না। এতে করে ঘাটে এসে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। অনেক যাত্রী বৃষ্টিতে ভিজে লঞ্চঘাটে এসে পুনরায় বাড়ি চলে গেছেন।
ভোলা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, নিম্নচাপের ফলে উপকূলের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভোলায় ১৭.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে (বিকাল ৩টা পর্যন্ত)। এদিকে ভোলা জেলার উপর দিয়ে ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। যার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১৪ নটিকেল মাইল। এছাড়াও আগামী ৫দিন, ২৯ জুলাই পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করতে পারে এবং সেই সাথে সাথে বজ্রবৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন ভোলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক মো: মনিরুজ্জামান।
এদিকে ভোলার ইলিশা নৌ-থানার ওসি মো: শাহিন উদ্দিন জানান, মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় ভোলার ইলিশা এলাকার মেঘনায় ৬ জেলে নিয়ে একটি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। পরে অন্য ট্রলারের সহযোগিতায় ডুবে যাওয়া ট্রলার ও জেলেদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার, ২৫ জুলাই সকাল ১০টার দিকে এ ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৫
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন