Advertise top
জীবনযাপন

লাল মাংস দিনে কতটুকু খাওয়া নিরাপদ

বরিশাল নিউজ ডেস্ক

প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৫, ১০:১৮ পিএম       

 লাল মাংস দিনে কতটুকু খাওয়া নিরাপদ
গরুর মাংস

প্রোটিন, খনিজ ও ভিটামিনের উৎকৃষ্ট উৎস হচ্ছে মাংস। তবে ‘রেড মিট’ বা লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাত ও চর্বিযুক্ত মাংস পরিমিত গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।  কারন লাল মাংস পরিমিত গ্রহণ না করলে ক্যান্সারসহ নানান ধরনের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

 

লাল মাংসের মধ্যে রয়েছে গরু, মহিষ, ছাগল, খাসি, ভেড়া ইত্যাদি। প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এসব মাংস থেকে পাওয়া যায় লৌহ, জিঙ্ক এবং বি ভিটামিন। আর এটা ভিটামিন বি-টুয়েল্ভ’য়ের ভালো উৎস।

 

লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস

যুক্তরাজ্যের ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস (এনএইচএস)’য়ের তথ্যানুসারে- বেশি মাত্রায় প্রক্রিয়াজাত ও লাল মাংস খেলে মলাশয়ের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।

 

তাছাড়া প্রক্রিয়াজাত মাংসে উচ্চমাত্রায় লবণ থাকে, যে কারণে হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ।

 

দৈনিক ৭০ গ্রামের বেশি রান্না করা লাল মাংস খাওয়া নিরাপদ না। পরামর্শ দেওয়া হয় যদি রান্না করা ৯০ গ্রাম মাংস খাওয়া হয় একদিনে, তবে পরের দিনগুলোতে মাংস খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে।

 

মাংসের আকার অনুসারে ওজনের সাধারণ হিসাব

ভেড়া, ছাগল, খাসি বা গরুর মাংসের ‘সানডে রোস্ট’ (তিনটা পাতলা টুকরা, একটি পাউরুটির আকারের অর্ধেক)- ৯০ গ্রাম।

গ্রিল্ড করা বিফ স্টেক- ১৬৩ গ্রাম।

৯ সে.মি. লম্বা দুটি সসেজ এবং দুটি পাতলা বেকন- ১৩০ গ্রাম।

বড় ডোনার খাবাব- ১৩০ গ্রাম।

সাধারণ আকারের বিফবার্গার- ৭৮ গ্রাম।

কর্ন্ড বিফ বা লবণ দেওয়া মাংসের টুকরা- ৩৮ গ্রাম।

ওপরের মাংসের ওজন গড় হিসেবে দেওয়া হলেও অন্তত আকার অনুযায়ী মাংসের ওজনের পরিমাণ ধারণা করা যায়।

 

মাংস ও স্যাচুরেইটেড ফ্যাট

কোনো কোনো মাংসে স্যাচুরেইটেড ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। এগুলো বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার পাশাপাশি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে বাড়ে হৃদরোগ হওয়ার ‍ঝুঁকি।

 

তাই সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়তে খেতে হবে পরিমিত।

কলিজা

লৌহের ভালো একটি উৎস হল কলিজা। এছাড়াও থাকে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ। তবে মাথায় রাখতে হবে, উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ গ্রহণ করাও ক্ষতিকর।

 

যুক্তরাজ্যের এনএইচএস জানাচ্ছে- খাবার ও সাপ্লিমেন্টস থেকে দৈনিক ১.৫ মিলি গ্রামের বেশি ভিটামিন এ, অনেকদিন ধরে গ্রহণ করলে বয়স বৃদ্ধির সাথে হাড় ক্ষয় বা ভঙ্গুর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

 

তাই কলিজা দিয়ে তৈরি খাবার প্রতি সপ্তাহে বেশি খাওয়া হলে, পরিমাণ কমাতে হবে।

 

অন্তঃসত্ত্বাদের কলিজা খাওয়া একেবারেই এড়ানো উচিত। কারণ অতিরিক্ত ভিটামিন এ, অনাগত শিশুর জন্য ক্ষতিকর।

 

এছাড়া বয়স্ক ও যাদের মেনোপজ হয়েছে তাদের হাড় ভঙ্গুর রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই কলিজা বা ভিটামিন এ, কম গ্রহণ করতে বলা হয়।

 

গর্ভাবস্থায় মাংস খাওয়াতে সাবধানতা

 

অন্তঃসত্ত্বার খাদ্যাভ্যাসে মাংস থাকাটা স্বাভাবিক। তারপর এই অবস্থায় যেসব বিষয় এড়াতে হবে, সেগুলো হল-

 

ভালো মতো রান্না করা মাংস খেতে হবে। অর্ধ সিদ্ধ বা ভালো মতো রান্না না হলে জীবাণুর সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাবে।

 

মাংস থেকে তৈরি যে কোনো ধরনের ‘কোল্ড মিট’, সসেজ, বেকন, মাংসের পিঠা ইত্যাদি খাওয়া এড়াতে হবে। কারণ এসবে থাকা ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া অনাগত শিশুর জন্য মোটেই নিরাপদ নয়।

 

কলিজা ও কলিজা দিয়ে তৈরি যে কোনো খাবারে ভিটামিন এ বেশি থাকবে। তাই জন্ম না নেওয়া সন্তানের কথা চিন্তা করে খেতে হবে কম।

রান্না করার সময় চর্বি ফেলে দেওয়া

 

যে কোনো ধরনের মাংস রান্না করার আগে চর্বি ও চামড়া লেগে থাকলে সেগুলো কেটে ফেলে দিতে হবে। পোল্ট্রি মানে- হাঁস, মুরগির চামড়াতে অন্যান্য মাংসের তুলনায় চর্বি বেশি থাকে।

 

এছাড়া রান্না পদ্ধতিতেও চর্বি কমানো যায়:

 

ভাজার পরিবর্তে মাংস গ্রিল করা।

রান্নার সময় অতিরিক্ত চর্বি বা তেল ব্যবহার এড়ানো।

শিক বা তারের জালি বা নেটের ওপর মাংস রোস্ট করা, যাতে চর্বি গলে পড়ে যায়।

মাংসের পরিমাণ কম রেখে প্লেটে সবজি বেশি রাখা।

 

সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম


 


মন্তব্য লিখুন


সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৫

Developed By NextBarisal