Advertise top
খেলা

এশিয়া কাপের নিরাপত্তায় কেন পাকিস্তান আর্মি

বরিশাল বিদেশ ডেস্ক

প্রকাশ : ২৭ আগষ্ট ২০২৩, ০৯:০৮ পিএম     আপডেট : ২৮ আগষ্ট ২০২৩, ০৫:৫০ পিএম

এশিয়া কাপের নিরাপত্তায় কেন পাকিস্তান আর্মি, কী ঘটেছিল

 

২০০৯ সালের ৩ মার্চ লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট টিম বাসে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানসহ ক্রিকেট দুনিয়া। সেদিনের ঐ ঘটনার পর থেকে পাকিস্তানে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক খেলা।

 

কী ঘটেছিল সেদিন

নিরাপত্তার অভাব দেখিয়ে পাকিস্তানে ভারত তাদের সফর বাতিল করেছিল। কিন্তু  শ্রীলঙ্কা খেলতে রাজী হয়। পাকিস্তানে তাদেরকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

 

সেই সময়ের বিবিসর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন লাহোরে হোটেল থেকে গাদাফি স্টেডিয়ামে ম্যাচের জন্য কয়েকটি বাসে করে রওয়ানা হয় সফরকারী শ্রীলঙ্কান দল এবং ম্যাচ পরিচালনার জন্য বিদেশ থেকে যাওয়া লোকজন।

 

খেলোয়ারদের বহনকারী গাড়ীর পিছনে একটি ভ্যানে ছিলেন আইসিসি ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড এবং পাকিস্তানের আম্পায়ার এহসান রাজা।

 

বিবিসিকে ক্রিস ব্রড বলেছেন, গাদ্দাফি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাছে মোড়ে গাড়িগুলো পৌঁছুনোর সাথে সাথে গুলি শুরু হয়ে যায়। গোলাগুলির শব্দ শুনে প্রথমে ক্রিস এবং এহসান ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি তাদের লক্ষ্য করেই এই হামলা।

 

২০ মিনিট ধরে গুলি চালানোর পর বন্দুকধারীরা পালিয়ে যায়।

 

হামলাকারীরা শ্রীলঙ্কান টিম বাসে রকেট-চালিত গ্রেনেড ছুঁড়েছিল। কিন্তু সেটি বাসের গায়ে লাগেনি। ড্রাইভার মেহের মোহাম্মদ খলিল অত্যন্ত সাহস করে অবিরাম গুলির মধ্যেই পুরো গতিতে বাস চালিয়েছিলেন। বাসের নীচে গ্রেনেড ছুড়ে মেরেছিলো হামলাকারীরা। কিন্তু অলৌকিকভাবে সেটা ফাটার আগেই বাসটি তা পেরিয়ে যায়। ড্রাইভার খলিল শ্রীলঙ্কান দলকে নিয়ে স্টেডিয়ামের ভেতরে ঢুকে যেতে পেরেছিলেন। তবে ছয়জন ক্রিকেটার আহত হয়েছিলেন।

 

তবে সেই হামলায় ক্রিস ব্রডের গাড়ির ড্রাইভার গাড়ীর সিটে বসে থাকা অবস্থায় মারা যান। তাঁর কাঁধে গুলি লেগেছিল। নিজের সিটেই ড্রাইভারের মৃত্যুর কারণে ম্যাচ কর্মকর্তারা রাস্তায় আটকা পড়ে যান। এ কারনে ঘেরাও হয়ে পড়েন।

 

হামলায় এহসান রাজার গায়ে দুটো গুলি লাগে। একটা তাঁর পিঠে, আরেকট পেটে। লাহোরের ডাক্তাররা এহসানের জীবন বাঁচাতে পারলেও, তার একটি ফুসফুস চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়।

 

এমন ঘটনার পর ২০১১ সালে বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হওয়ার সুযোগ হারায় পাকিস্তান। 

 

৬ বছর পর ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মধ্য দিয়ে আবারো পাকিস্তানে চালু হয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আর ২০০৮ সালের পর এবার পেলো মহাদেশীয় কোনো ইভেন্ট।

 

তবে নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারত দল কোনোভাবেই পাকিস্তান যাবে না বলে হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ চালাতে হচ্ছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে।

 

বাংলাদেশ দল সবশেষ ২০২০ সালে পাকিস্তান সফর করেছিল। সে সময়েও দলকে দেয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা। এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ৩০ আগস্ট এশিয়া কাপ শুরু হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে আজ ২৭ আগস্ট থেকেই যা থাকবে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ম্যাচ চলাকালীন ৭ হাজারেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মীরা থাকবেন স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণসহ পুরো শহর জুড়ে।

 

এছাড়া দেশটির স্পেশাল কমান্ডো বাহিনীও থাকবে মাঠের আশেপাশে। ম্যাচ দেখতে আসা দর্শকদেরও মাঠে ঢুকতে হবে বেশ কয়েকটি বলয়ের তল্লাশী পেরিয়ে। এশিয়ার মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। এশিয়া কাপে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রশাসন।

সূত্র: বিবিসি


মন্তব্য লিখুন


সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪

Developed By NextBarisal