বরিশাল নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:০৯ পিএম আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:১০ পিএম
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবিতে বিদেশী বিশিষ্টজনের খোলা চিঠির প্রতিবাদ করে সুপ্রিম কোর্টের ৫১০ জন আইনজীবী বিবৃতি দিয়েছেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সই করা ৫১০ আইনজীবীর এই বিবৃতি সোমবার গণমাধ্যমের কাছে ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল।
এ সময় সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকিরসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে সম্প্রতি অব্যাহতি দেওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভুঁইয়াকে উদ্দেশ্যে করে মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, মার্কিন দূতাবাসে স্ব-উদ্যোগে তিনি গিয়েছেন। কোনো ভয়-ভীতিতে এ কাজ করেননি, সেটা তিনি নিজেই বলেছেন। মার্কিন দূতাবাসে তাকে জায়গা দেওয়া ঠিক হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সদস্যদের লেখা খোলাচিঠি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। চিঠিতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে চলমান মামলাসমূহের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিতের আহ্বান জানানো হয়, যা দেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর স্পষ্ট হুমকি হিসেবে আমরা বিবেচনা করছি।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ার ওপর এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইনের শাসন ও বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী আইনের চোখে সবাই সমান। যেকোন সভ্য দেশে কেউ অপরাধ করলে সেদেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে এটাই স্বতঃসিদ্ধ। আমরা ড. ইউনূসের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করেছি যে, তার প্রতিষ্ঠানের ভুক্তভোগী শ্রমিকরাই দেশের প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। উক্ত খোলাচিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিদেশী নাগরিকগণ ভুক্তভোগী শ্রমিকদের স্বার্থকে পাশ কাটিয়ে অন্যায়ভাবে ড. ইউনূসের স্বার্থ রক্ষায় বিবৃতি প্রদান করেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।
‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের আলোকে মামলার কার্যক্রম চলমান থাকার আদেশের পর বিদেশি সুশীল নাগরিকেরা ড. ইউনূসের মামলার কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করে অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ করেছেন এবং এই অনুরোধ বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি তাদের অসম্মান প্রদর্শন করারও শামিল, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। ’
উচ্চ আদালতের এই ৫১০ আইনজীবীর মতে, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বা সরকার কোনো মামলা প্রত্যাহার, স্থগিত বা বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার আইনগত কোনো সুযোগ নেই। এছাড়াও, বাংলাদেশ আইএলও এবং জাতিসংঘের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংক্রান্ত দলিলের অনুস্বাক্ষরকারী হিসেবে এ সংক্রান্ত সকল অনুশাসন সর্বোচ্চ সম্মান ও গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করে।
‘সম্মানিত বিদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে ড. ইউনূসের পক্ষে তাদের দেওয়া বিবৃতি প্রত্যাহার করে বাংলদেশের বিচার ব্যবস্থায় অযাচিত হস্তক্ষেপ করা থেকে নিজেদের নিবৃত রাখবেন বলে বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়।
ব্রিফিংয়ের মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ডিএজি এমরান অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে এ ধরনের বিবৃতি দিতে পারেন না। এটা আইনের লঙ্ঘন। বিতর্ক সৃষ্টি করার জন্যেই তিনি এ কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, মার্কিন দূতাবাসে স্ব-উদ্যোগে তিনি গিয়েছেন। কোনো ভয়-ভীতিতে এ কাজ করেননি, সেটা তিনি নিজেই বলেছেন। তবে মার্কিন দূতাবাসে তাকে জায়গা দেওয়া ঠিক হয়নি। অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া সাধারণ মানুষতো সেখানে যেতে পারেন না। তাহলে কেন তাকে পরিবারসহ ডেকে নেওয়া হয়েছে। তাকে ডেকে নিয়ে কাজটা ঠিক করেনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, বরখাস্ত ডিএজি এমরান বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্যই না। তাকে নতুন করে বরখাস্ত করার প্রশ্নই আসে না।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন