Advertise top
বিদেশ

পদত্যাগ করলেন টিউলিপ, দরজা খোলা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী

বরিশাল নিউজ বিদেশ ডেস্ক

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৬ এএম    

পদত্যাগ করলেন টিউলিপ, দরজা খোলা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সাথে টিউলিপ।ছবি: সংগৃহীত

সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রীর (সিটি মিনিস্টার) পদ থেকে পদত্যাগ করেছে টিউলিপ সিদ্দিক। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে ১৪জানুয়ারি মঙ্গলবার তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার পদত্যাগপত্র গ্রহন করে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার লিখেছেন, ‘সামনের দিনগুলোয় আপনার জন্য দরজা খোলা রইল’।

 

টিউলিপ দেশটির আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে ছিলেন। তার উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এমা রেনল্ডস।

 

টিউলিপ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

 

বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই মন্ত্রী। বিশেষ করে কয়েক সপ্তাহ ধরে টিউলিপ ইস্যুতে সরগরম প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ডাউনিং স্ট্রিট। আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় আলোচনা ভিন্নমাত্রা পেয়েছিল।

 

দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনগুলোর জোট ‘ইউকে অ্যান্টিকরাপশন কোয়ালিশন’ তাঁকে পদত্যাগের আহ্বান জানায়। তবে ৪২ বছর বয়সী এ  মন্ত্রী তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

 

পদত্যাগপত্রে প্রধানমন্ত্রী আস্থা রাখায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন টিউলিপ। তিনি লেখেন, আমার অনুরোধে আমার বিষয়ে গভীর পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস। পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত করেন, আমি অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রিত্বের কোনো নিয়মনীতি লঙ্ঘন করিনি। তিনি এটাও জানান, আমার বিরুদ্ধে নিজের বাড়ি ও যেখানে বসবাস করি, সে সম্পত্তি অন্যায়ভাবে ব্যবহারের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

 

টিউলিপ পদত্যাগপত্রে আরও বলেন, মন্ত্রী হওয়ার পর আমার সম্পূর্ণ তথ্য সরকারকে দিয়েছি। আমার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী– তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর স্বার্থের সংঘাত এড়াতে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি আমার কর্মকর্তারা আমাকে এড়িয়ে চলতে বলেন। আমি আপনাকে এতটুকু নিশ্চিত করতে চাই, আমি সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে আগেও কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও কাজ করব। তবে এটি পরিষ্কার, মন্ত্রী হিসেবে আমার কাজ চালিয়ে যাওয়া সরকারের কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। আমার সমর্থন সব সময় লেবার পার্টির সরকারের সঙ্গে থাকবে। আমি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পেছন থেকে আমি সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাব।

 

গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ইন্ডিপেনডেন্ট এথিকস অ্যাডভাইজার স্যার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে হাজির হয়ে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি।’

 

এর আগে যুক্তরাজ্যের দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনের জোট জানায়, ‘আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতা ও যুক্তরাজ্যের সুনাম রক্ষায় সরকারের পক্ষে অনেক জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ টিউলিপের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কারণে সৃষ্ট স্বার্থ-সংঘাতে এটি এখন স্পষ্ট নয়, তিনি এসব সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কিনা। তিনি মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও অর্থনৈতিক অপরাধ মোকাবিলার দায়িত্বে আছেন। অথচ তার সরাসরি পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে একটি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে, যা ওই কাঠামোর অধীনে তদন্তের মুখোমুখি হতে পারে। এই স্বার্থ-সংঘাত তদন্তের ফলাফল যাই হোক না কেন, তা বহাল থাকে।’

 

আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং হাসিনা প্রশাসনের সদস্য ও তার সংগঠনের সম্পদ জব্দ প্রশ্নে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় জোটটি। পাশাপাশি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সদস্য ও সহযোগীদের সম্পদের সন্দেহজনক গতিবিধির জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করতেও ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

 

আপনার জন্য দরজা খোলা রইল: স্টারমার

টিউলিপের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার। টিউলিপকে একটি চিঠিও লিখেছেন তিনি। স্টারমার লেখেন, আমি আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছি। ব্রিটেনকে বদলে দেওয়ার যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি, সেখান থেকে আমাদের মনোযোগ ব্যাহত করার চলমান যে ঘটনাপ্রবাহ, তার সমাপ্তি টানার জন্য আমি আপনার প্রশংসা করছি। আপনি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি স্পষ্ট করতে চাই, সামনের দিনগুলোয় আপনার জন্য দরজা খোলা রইল।

সূত্র: সমকাল


 


মন্তব্য লিখুন


Ish Brand

সর্বশেষ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৫

Developed By NextBarisal