Advertise top
আদালত-অপরাধ

গণহত্যা মামলা: আসামীদের আইনজীবী সমাজীকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিচ্ছে সরকার

বরিশাল নিউজ ডেস্ক

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ পিএম     আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম

গণহত্যা মামলা:  আসামীদের আইনজীবী সমাজীকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিচ্ছে সরকার
আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে গণহত্যার বিচার শুরুতেই চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আসামি পক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীর বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

 

এহসানুল হক সমাজী সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ পাঁচজনের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ওই আদালতে এসেছিলেন।

 

তাজুল ইসলাম আদালতকে জানান এহসানুল হক সমাজী সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন এবং সে কারণে তিনি এখন আসামিদের পক্ষে দাঁড়ালে সেটি ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা স্বার্থের দ্বন্দ্ব হতে পারে। এ কারণে তিনি সমাজীকে শুনানি থেকে বিরত থাকার জন্য আদালতের মাধ্যমে অনুরোধ করেন।

 

আইনজীবী সমাজী আদালতকে জানান যে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। তখন তাজুল ইসলাম বলেন যে তিনি দায়িত্ব নিয়েই বলছেন এবং সরকারের দিক থেকে খুব শিগগিরই এটি জানানো হবে।

 

তখন আদালত এহসানুল হক সমাজীর কাছে জানতে চান যে তিনি এখন কী করবেন। জবাবে পাঁচ আসামীর আইনজীবী সমাজী বলেন তিনি বিষয়টি নিয়ে কিছু জানেন না এবং সরকারের দিক থেকে এমন কিছু এলে তিনি সেটি প্রত্যাখ্যানও করতে পারেন।

 

“তারপরেও চিফ প্রসিকিউটর যেহেতু বলছেন সে কারণে বিতর্ক এড়াতে ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আজ শুনানি করছি না,” বলছিলেন তিনি।

 

পরে আজিজুর রহমান নামে আরেকজন আইনজীবী আসামিদের পক্ষে কথা বলবেন বলে জানান এহসানুল হক সমাজী। তবে তার আবেদন বিচারকরা হাতে না পাওয়ায় আজ তার বক্তব্য তিনি উপস্থাপন করেননি।

 


আসামী পক্ষের হয়ে লড়াই করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান আইনজীবী সমাজী


এরআগে সকালে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে লড়াই করার কথা জানিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।

 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

 

তবে কার পক্ষে ওকালতি করবেন তা পরিষ্কার করেননি সমাজী। যার পক্ষে লড়বেন ওকালতনামায় সই করার পর তা জানাবেন বলে জানান সিনিয়র এই আইনজীবী।

 

গত আগস্টে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সাধারণ আইনজীবীর ব্যানারে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে সেই নিয়োগ বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেখানে অবিলম্বে এহসানুল হক সমাজীর নিয়োগ বাতিলের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানান তারা। তা না হলে তাকে এ দায়িত্বপালন করতে দেওয়া হবে না মর্মে হুমকি প্রদান করেন। তারা সমাজীকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রেতাত্মা বলে অভিহিত করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সুবিধা দেয়ার জন্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

 

এ সমাবেশে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিএনপি দলীয় সাবেক সভাপতি বোরহান উদ্দিন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকীকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। সমাজী পদত্যাগ না করলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তারা।

 

পরে তিনি আর ওই পদে যোগ দেননি।

 

এহসানুল হক সমাজী একজন স্বনামধন্য ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তিনি বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) কোড, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সংশোধনী সংক্রান্ত কাগজ তৈরির জন্য জাতীয় পরামর্শদাতা ছিলেন।

 

সমাজী ২০০৭-২০০৯ মেয়াদে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তার মেয়াদে রাষ্ট্র/প্রসিকিউশনের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ফৌজদারি আদালতে সমস্ত মামলা পরিচালনা করেন তিনি।

 

১৯৮৬ সালের ৩০ অক্টোবর একজন আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। ওই বছরের ৪ নভেম্বর তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯২ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন।

 

সূত্র: বিবিসি ও অনলাইন


 


মন্তব্য লিখুন


সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪

Developed By NextBarisal