Advertise top
বাংলাদেশ

জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমি মারা যাব: প্রধানমন্ত্রী

বরিশাল নিউজ ডেস্ক

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ০৬:৪৩ পিএম    

জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমি মারা যাব: প্রধানমন্ত্রী
এসএসএফ’র ৩৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে পিএমও শাপলা হলে আয়োজিত দরবারে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) এর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে কিন্তু আমাকে মারতে আর গুলি বোমা লাগবে না, এমনিতেই শেষ হয়ে যাব। এরাই আমার প্রাণ শক্তি। কাজেই জনগন থেকে যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ি সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

 

প্রধানমন্ত্রী আজ এসএসএফ’র ৩৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে আয়োজিত দরবারে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, একটি বিষয় আমি নিশ্চই বলবো, আমরা রাজনীতি করি। আমার আর কোন শক্তি নেই। শক্তি একমাত্র জনগণ। সেই জনগণের শক্তি নিয়েই আমি চলি।

 

শেখ হাসিনা এই সময় এক দরিদ্র রিক্সাওয়ালার উপার্জনের সামান্য জমানো অর্থে তাঁর নামে একটি জমি কেনার এবং তাঁর কাছে হস্তান্তর করতে চাওয়ার একটি ঘটনার উল্লেখ করেন। তাঁদের দু’বোনের ঢাকায় কোন বাড়ি না থাকায় এবং ধানমন্ডীর বাড়িটিও তাঁরা দান করায় রিকসাওয়ালা তাঁকে ওই জমি দান করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকবার তাকে নিষেধ করা সত্বেও সে শোনে নাই। সেই রিক্সাওয়ালার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সেই দলিলটা তাঁর কাছে হস্তান্তর করতে চাইলে তিনি নিজে সেখানে গিয়ে তাদের বাড়ি তৈরি করে তার স্ত্রীর হাতে দলিল দিয়ে বলেন, এটা মনে করবেন আমারই বাড়ি, এখন আপনারা থাকবেন। অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর খালেদা জিয়ার জন্য দুইটি বাড়ি, গাড়ি, ক্যাশ টাকা অনেক কিছু রেখে যান।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

 

এসএসএফ’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

 

গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে বার বার বেঁচে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা তাঁর নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছেন তাদের জীবনও ঝুঁকিতে পড়ছে।

 

তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে হয়তো একটা কাজ দিয়ে পাঠিয়েছেন ততক্ষণ আমি বেঁচে থাকবো। কিন্তু, আমার সঙ্গে যারা কাজ করে এবং যারা আমার নিরাপত্তায় নিয়োজিত তাদের জন্য আমি চিন্তায় থাকি। কারণ, যতবার আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে প্রতিবারই আমার কিছু না কিছু নেতা-কর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। তারা ‘মানববর্ম’ রচনা করে আমাকে গ্রেনেড হামলা থেকে রক্ষা করেছেন। কাজেই এসএসএফ  যেহেতু আমার সবচেয়ে কাছে থাকে, আমি সবসময় তাদেরকে নিয়ে আমি চিন্তিত।

 

কাজেই তিনি যখন নামাজ পড়েন তখন পরিবারের সদস্য, দেশবাসী এবং তাঁর আশপাশে যারা থাকেন এবং নিরাপত্তায় এসএসএফসহ  যারা নিয়োজিত থাকেন তাদের জন্যও দোয়া করেন বলেও জানান।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসএসএফ’র জন্য যা যা করণীয় তাঁর সরকার করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’৯৬ সালে সরকারে আসার পরই তিনি তাঁদের তেজগাঁওয়ে স্যুটিং প্রাকটিসের জায়গা করে দেন। এখন আধুনিক ও উন্নতমানের সুটিং রেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। তাদের অফিসার্স মেস থেকে শুরু করে সবকিছুই কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর হাতে গড়া। লোকবলও তিনিই বৃদ্ধি করেছেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাড়ি থেকে শুরু করে আধুনিক সরঞ্জামাদি যা যা দরকার সবই কিন্তু আমরা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শুধু  এসএসএফ  নয়, সকল প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নেই তাঁর সরকার কাজ করেছে। এমনকী শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষায় যা যা দরকার তার ব্যবস্থা ও করেছে।

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমি এসএসএফ’র সবাইকে বলবো যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা প্রদানে সবসময় পেশাগত দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি প্রত্যেকেই দৃঢ়তা, উন্নত শৃংখলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুণাবলী নিয়েই নিজেদেরকে তৈরি করে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে।

 

তিনি বলেন, যেটা তারা করে যাচ্ছেন তারপরও তিনি সবসময় এই কথাগুলো তাদের মাথায় রাখার আহবান জানান। কারণ, নিজের ভেতর যদি দৃঢ়তা না থাকে, সততা না থাকে এবং নিরলসভাবে দায়িত্ব পালনের সেই কর্তব্যনিষ্ঠা না থাকে তাহলে সফলতা পাওয়া যায় না।

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এসএসএফ এমন একটি সংগঠন যেখানে আমাদের সব বাহিনীরই প্রতিনিধি রয়েছে। পুলিশ ও অনসার বাহিনী থেকে শুরু করে নৌ-বিমান ও সেনাসহ সব বাহিনীর সমন্বয়ে এই বাহিনী গঠিত। একই সাথে কাজ করার এটাও একটা অভিজ্ঞতা। যে অভিজ্ঞতা আমি মনে করি আগামী দিনেও আমাদের দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের যে অভিযানের সাফল্য সেটাও ধরে রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। নতুন যারা কাজ করতে আসেন তাদের মধ্যে এই অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত হয় এবং আমি দেখেছি অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে প্রত্যেকেই স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।

 

প্রধানমন্ত্রী এসএসএফ এর সকল সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া আশির্বাদ জানিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শৃংখলা, আনুগত্য ও পেশাপত মান বিচারে এই বাহিনী হয়ে উঠুক একটি আদর্শ নিরাপত্তা বাহিনী।

সূত্র: বাসস


মন্তব্য লিখুন


Ish Brand

সর্বশেষ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪

Developed By NextBarisal