বরিশাল নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০১:১১ পিএম
দেশে নতুন কোনো স্থাপনা হলে তা ঘিরে মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করে। সেই সত্তরের দশক থেকে ফার্মগেটের পদচারী-সেতু থেকে শুরু করে আজকের পদ্মা সেতু পর্যন্ত এমন চিত্র দেখা যায়। তবে সেই উৎসাহ-উদ্দীপনা অনেক সময় মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। যেমনটি আমরা দেখেছি পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পরপরই। অনেকটা একই দৃশ্য দেখা গেল চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল ঘিরেও। কিন্তু অনেকে টানেলের ভেতরে চলাচলের নির্দেশনা অমান্য করছেন। এতে ঘটছে দুর্ঘটনাও।
প্রায় সাড়ে চার বছরের নির্মাণকাজের পর গত শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিনই এই টানেল সর্বসাধারণের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এ টানেল ভ্রমণে অনেকে বেশি উৎসাহী হলেও পিছিয়ে নেই সাধারণ মানুষও। তাঁদের টানেল দেখার সুযোগ করে দিতে ভাড়ায় বাস ও মাইক্রোবাস সার্ভিসও চালু হয়েছে স্থানীয়ভাবে। তবে গাড়ি চালনায় কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। তবে সেগুলোর কিছু মানছেন না অতি উৎসাহী লোকজন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, পাল্লা দিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, গাড়ি থামিয়ে ছবি ও সেলফি তোলা, গতিসীমা অমান্য এবং লেন পরিবর্তন করে সামনের গাড়িকে ধাক্কা-চালুর তিন দিনের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটেছে টানেলের ভেতরে। গভীর রাতে টানেলের ভেতরে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে বেশ সমালোচনা তৈরি হয়েছে। গাড়িগুলোকে চিহ্নিত করতে সেতু কর্তৃপক্ষ তৎপর হলেও থেমে নেই এমন ঘটনা। টানেলের ভেতরে গাড়ি চালনায় প্রতিযোগিতা করতেই যেন নামছেন একশ্রেণির চালক। সোমবার রাতে একটি দ্রুতগামী বাস টানেলের ভেতরে একটি কারকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। তবে তাতে কেউ হতাহত হয়নি। টানেলের ভেতরে গাড়ি থামিয়ে ফটোসেশন করতে দেখা যায় একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের।
টানেলের ভেতরে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী গাড়িচালকদের ধরতে পুলিশের জন্য আইনি জটিলতাও আছে। পুলিশ চাইলেই গাড়ি নিয়ে টানেলের মধ্যে প্রবেশ করতে পারছে না। তাদেরও টোল দিতে হবে। ফলে পুলিশকে থাকতে হচ্ছে টানেলের বাইরে। আর টানেলের দুই পাশে থানা হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে এখন ফাঁড়ি বসছে। তবে টানেল উদ্বোধন ও চালু হলেও সেই ফাঁড়ি এখন পর্যন্ত হয়নি। টানেলকে নিয়ে দুই পাশের সড়কসহ আশপাশ এলাকা দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। সেখানে বিপুল মানুষের সমাগম ঘটছে। মানুষের নিরাপত্তা ও টানেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সুরক্ষার জন্য দ্রুত ফাঁড়ি বসানো দরকার বলে আমরা মনে করি। সেই সঙ্গে যাত্রী-চালক-দর্শনার্থীর সবার মধ্যেই আইন ও নির্দেশনা মানতে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
প্রথম আলোর সৌজন্যে
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন