বরিশাল নিউজ ঢাকা ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:১০ পিএম আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৩৯ পিএম
বৈশ্বিক কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বর্তমানে যে মূল্যস্ফীতি রয়েছে, তা কমাতে হবে। সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। রবিবার সচিবালয়ে সর্বজনীন পেনশন তহবিলের অর্থ ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকে সুদের হার নয়-ছয় না থাকলে, অনেক ছোট ও বড় শিল্প হারিয়ে যেতো। সুদের এই হারের কারণে সেগুলোকে টিকিয়ে রাখা গেছে। তাই নয়-ছয় সুদের হারের কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, এটি ভাবা ঠিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বলছে বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে। বর্তমানে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ থেকে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ভালো দিন খুব বেশি দিন থাকেনি। একের পর এক যুদ্ধ লাগছে, সেসব মাথায় রেখে বিশ্বের সাথে তাল রেখে সরকারকে কাজ করতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে সর্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা হওয়া অর্থের বিনিয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান অর্থমন্ত্রীর নিকট সর্বজনীন পেনশন তহবিলের বিনিয়োগে ক্রয়কৃত ট্রেজারি বন্ড আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। আজ রবিবার প্রাথমিকভাবে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এরই মধ্যে সর্বজনীন পেনশন তহবিলে প্রায় ১৫ হাজার জন চাঁদা প্রদান করেছেন। এ পর্যন্ত তাদের জমা হওয়া অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আজ জমাকৃত অর্থ হতে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকার ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড ক্রয় করে বিনিয়োগ করা হলো।
অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য অতিরক্তি সচিব মো. গোলাম মোস্তফা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইজদানী খান, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা এবং অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনকল্যাণমূলক সর্বজনীন পেনশন স্কিমের শুভ উদ্বোধন করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাস’, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য ‘সুরক্ষা’ এবং স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য ‘সমতা’ স্কিমের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে পেনশনের জন্য অর্থ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘সর্বজনীন পেনশন তহবিল’ শিরোনামের ব্যাংক হিসাবে পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী সবার চাঁদার অর্থ জমা থাকবে। এই অর্থ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নিরাপদ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের ট্রেজারি বন্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য লভ্যাংশের ভিত্তিতে পেনশনারের মাসিক এন্যুয়িটি হিসাব করে মাসিক পেনশন দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তি কত টাকা কত সময় ধরে জমা দিয়েছেন, কী পরিমাণ পেনশন প্রাপ্য হবেন, তার একটি সম্ভাব্য হিসাব দেখানো হয়েছে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের এ যাবত গৃহীত কার্যক্রম এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে মিডিয়াতে প্রচার করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
পেনশন স্কিম সম্পর্কে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। এর মাধ্যমে দেশের মানুষ, বিশেষ করে দুর্যোগ মুহূর্তে মানুষের বিশেষ সুবিধা দেবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের অবস্থা আমাদের চেয়েও খারাপ ছিল। মায়েরা তাদের চুল বিক্রি করে সন্তানদের শিক্ষার ব্যয় নির্বাহ করত। আমাদের অবস্থা তাদের চেয়ে খারাপ নয়। দেরিতে হলেও আমরা এই ব্যবস্থা চালু করতে পেরেছি। আশা করি, এর সুফল এ দেশের মানুষ পাবেন। এজন্য ব্যাপক প্রচারের প্রয়োজন। বিশেষ করে, যারা বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন, তাদের এই পেনশন স্কিমে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে মিডিয়াকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
সূত্র: বাসস, রাইজিংবিডি
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন