বরিশাল নিউজ
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ পিএম আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্লান অনুমোদনে জটিলতা, হয়রানির প্রতিবাদ ও ১০ দফা বাস্তবায়নে মানববন্ধন করেছে বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলন।
সিটি কর্পোরেশনের সামনে বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর এ কর্মসূচি পালিত হয়।
বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে তারা বলেন, সিটি করপোরেশন এলাকায় ভবন নির্মাণে দীর্ঘদিন ধরে প্লান দেয়া বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বাসিন্দারা।
এসময় বক্তারা ইমারত নির্মান বিধিমালা ১৯৯৬ এর উপ-বিধি (৭) অনুসারে ৪৫ দিনের মধ্যে প্লান অনুমোদন দেয়া ও গেজেট বহির্ভূত ও অকার্যকর মাস্টার প্লানের অজুহাত বন্ধ করার দাবি জানান। তারা বলেন, শহরের অধিকাংশ রাস্তার প্রশস্ততা কম থাকায় প্রচলিত নিয়মে প্লানের অনুমোদন দিতে হবে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ১৯৯৬ বহির্ভূত ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র প্রথা বাতিল করতে হবে। বিধিমালা ১৯৯৬ এর তফসিল-২ অনুসারে প্লান অনুমোদনের ফি নির্ধারণ করতে হবে। যে সমস্ত এলাকায় কিংবা বাড়িতে পানির সরবরাহ লাইন সংযোগ করা হয়নি সেই সব এলাকার জনগণকে পানির বিল হতে অব্যাহতি দিতে হবে। ভবনে বসবাস শুরু করার পূর্বপর্যন্ত হোল্ডিং ও পানির বিল নেয়া যাবে না। প্লান অনুমোদনসহ সব ধরনের সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করতে হবে। পূর্বে ভরাটকৃত ব্যক্তিগত রেকর্ডিয় জমির শ্রেণিতে পুকুর উল্লেখ থাকলে প্লান অনুমোদন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। খালের পাড়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের রেকর্ডিয় জমির ক্ষেত্রে ইমারত নির্মাণে জমি ছাড়ের ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবভিত্তিক সমাধান করতে হবে।
এ ১০ দফা আগামী ৭ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. আবু সালেহ্ ও যুগ্ম আহবায়ক হাফিজুর রহমান হীরাসহ প্রমুখ।
এর আগে ৭ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের কাছে একই দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছিল বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলন।
বাড়িঘর নির্মাণে বার বার বিধি পাল্টানোর কারণে নতুন বাড়ি তৈরির পরিকল্পনার (প্ল্যান) নকশা অনুমোদন আটকে রয়েছে বহুদিন ধরে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এর ফলে নির্মাণ সামগ্রীর ঊর্ধ্বগতির বাজারে তাদের আর্থিক লোকসান হচ্ছে। নকশা আটকে থাকায় নগর ভবন কর্তৃপক্ষও রাজস্ব হারাচ্ছে বলে ক্ষোভ রয়েছে কর্মকর্তাদের।
ভবনের নকশা তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, গত প্রায় এক বছর ধরে সিটি করপোরেশন থেকে নানা অজুহাতে নকশা পাস করাতে পারছেন না বাড়ির মালিকরা। তারা বলছেন, সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়রের চেয়ারে বসার পর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ চালু করেন। সাদিকের চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত মেয়রের চেয়ারে বসার পর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ বাদ দিয়ে ১৯৯৬-এর বিধিমালা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন।
এখন ২০০৮ নাকি ১৯৯৬ বিধিমালা এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন নগরবাসী।
সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান, কর্তৃপক্ষ নিয়ম অনুযায়ী দাখিল করা নকশাগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেন। এক্ষেত্রে একটি বোর্ডও রয়েছে। ১৯৯৬-এর স্থাপনা বিধিমালা বাস্তবায়ন ও অনুমোদনে দুটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এক থেকে ছয়তলা ভবনের নকশার জন্য আবেদন জমা আছে ৬৮০টি। আর সাততলা থেকে এর বেশি উচ্চতার ভবনের নকশার অনুমোদনের আবেদন জমা পড়েছে ৩৭টি। তবে ভবন নির্মাণের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, আটকে থাকা নকশার সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি।
বাড়িঘর নির্মাণে ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারী বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলমান। একটা টিম কাজ করছে। খুব শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান পাবেন নগরবাসী।
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন