বরিশাল নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
দেশের সাত বিভাগে (ঢাকা ব্যতীত) কিশোরীদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে। চারসপ্তাহ ব্যাপী এই ক্যাম্পেইনে ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভির সহায়তায় এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) ডিপিএম ডা.রাজীব সরকার জানান, টিকা গ্রহণকারী প্রত্যেককে নিবন্ধন করতে হবে ww w.vaxepi.gov.bd এই ওয়েবসাইটে। ইতোমধ্য টিকা গ্রহণের জন্য ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৬০৮ জন কিশোরী টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগের প্রায় ১৫ লক্ষাধিক কিশোরীকে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করা হয়েছে। এতে কোন কিশোরীর কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জরায়ুরমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে মোট ১৮দিন টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ১০দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও ইপিআই স্থায়ী কেন্দ্রসমূহে এ কার্যক্রম চলবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম-৯ম শ্রেণীর ছাত্রীরা টিকা পাবে। কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা নিতে অসমর্থ হলে তারা স্থায়ী কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবে। এছাড়া স্থায়ী কেন্দ্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীরাও টিকা গ্রহণ করতে পারবে।
পরবর্তী ৮ দিন নিয়মিত ইপিআই স্থায়ী (জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) ও অস্থায়ী (বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এর টিকাদান কেন্দ্র) টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে কমিউনিটির ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের টিকা প্রদান করা হবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাদ পড়া ৫ম-৯ম শ্রেণীর ছাত্রীরাও টিকা নিতে পারবেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রাজিব সরকার জানান, বছরে বিশ্বের প্রায় ছয় লাখ নারী জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে তিন লাখ মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে বছরে আক্রান্ত হন আট হাজার ২০০ জন, আর মারা যান চার হাজার ৯০০ নারী। দেশে নারীরা যত ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হচ্ছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার।
তিনি আরও জানান, অল্প বয়সে বিয়ে, বেশি সন্তান জন্ম দেওয়া, ঘন ঘন গর্ভধারণ, একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ানো স্বামীদের কারণে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সাধারণত এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হওয়া থেকে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৫-২০ বছর সময় লাগে। এজন্য এই রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই প্রায় শেষ পর্যায়ে শনাক্ত হন যখন রোগ থেকে সেরে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কিশোরীদের নির্দিষ্ট বয়সে ১ ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সূত্র: বাসস
সম্পাদক ও প্রকাশক: শাহীনা আজমীন ।। স্বত্ব © বরিশাল নিউজ ২০২৪
Developed By NextBarisal
মন্তব্য লিখুন