মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে।। হাজিরা খাতায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৫ জন । উপস্থিত ছিল ১২২ জন। আর তাদের পাঠদানের জন্য শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন মাত্র একজন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৭ এপ্রিল দেখা গেছে এই হাল ।
এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ছয়টি পদ থাকলেও চারজন শিক্ষক পদায়ন করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আব্বাস উদ্দিন গত এক বছর ধরে সাময়িক বরখাস্ত। সহকারি শিক্ষক আরিফুর রহমানও মামলাজনিত কারণে গত চার মাস ধরে সাময়িক বরখাস্ত। অপর সহকারি শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম জানুয়ারি মাস থেকে প্রশিক্ষণে পিটিআইতে। তাই গোটা স্কুলের দায়িত্বে এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কাসেম।
স্কুলের প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাজিরা কল করা, ক্লাস নেওয়া, বিস্কুট বিতরণ সবই করতে হচ্ছে তাকে। সেই সাথে শিক্ষা অফিসের মাসিক সভা ও বিভিন্ন সরকারি ও জাতীয় অনুষ্ঠানেও তাকে উপস্থিত থাকতে হচ্ছে। বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করে এই একা চলার যাত্রা শুরু তার।
শনিবার বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিকে ২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৩২ জনের মধ্যে ২৮ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২৬ জনে ২০, তৃতীয় শ্রেণিতে ৩০ জনে ২১, চতুর্থ শ্রেণিতে ২৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো।
এ স্কুলে সন্তান ভর্তি করে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। স্থানীয় মো. রমজান হোসেন জানান, এই গ্রামে একটাই স্কুল। সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কাসেম বলেন, তিনি একা আর কি করবেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দিন মোল্লা জানান, দুইজন শিক্ষক বরখাস্ত থাকায় শিক্ষক সংকটের কথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্ত শিক্ষক পদায়ন হয়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনি লাল সিকদার বলেন, বিষয়টি অবগত আছেন। অগামী দু’একদিনের মধ্যে ডেপুটেশনে শিক্ষক দিয়ে সংকট সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
বরিশাল নিউজ/রাজু