পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৫তম বর্ষ পূর্ণ হলো আজ। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির চুক্তি সম্পাদিত হয়। সেদিন প্রাথমিকভাবে শান্তি বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। সরকার তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে।
আর তার পর থেকেই বদলে যায় সেই পাহাড়ের দৃশ্যপট। উন্নয়নের ছোঁয়া সবখানে। ১৩২ কেভি পাওয়াগ্রিড নির্মাণ করা হয়েছে। সরকার দুর্গম এলাকায় সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে আলোকিত করা হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবানে উন্নয়নের হাওয়া লেগেছে।
গড়ে উঠেছে নান্দনিক সৌন্দর্যের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। গড়ে উঠেছে রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ, খাগড়াছড়ি প্রাইমারি শিক্ষকদের ট্রেনিং সেন্টার পিটিআই সেন্টার, রাঙামাটি নার্সিং কলেজ, রাঙামাটি কৃষি ডিপ্লোমা কলেজ, খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, খাগড়াছড়ি হাসপাতাল ভবন, উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন, জেলার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম, খাগড়াছড়ি ডায়াবেটিস হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। পার্বত্য তিন জেলার ২৬টি উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি ৪৪টি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। শিক্ষা, যোগাযোগ, কৃষিসহ সবক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
এক সময়ের দুর্দান্ত প্রভাবশালী শান্তি বাহিনীর গেরিলাদের গায়ে শোভা পাচ্ছে পুলিশের পোশাক। সাজেকে গড়ে উঠেছে বড় বড় হোটেল-রেস্তোরাঁ। প্রতিনিয়ত আসছেন হাজার হাজার পর্যটক।
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপনে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং কেক কাটা, আলোচনা সভা, রোড শো, ব্যানার-ফেস্টুন-ডিজিটাল ডিসপ্লে, চুক্তি পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় নানা উন্নয়ন বিষয়ক প্রচার-প্রচারণা, স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা বিকালে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে সম্প্রীতি কনসার্ট ও ফানুস ওড়ানো হবে।
তবে সেখানে খুনসহ নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে এখনও। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজেদের স্বার্থে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরকারী জনসংহতি সমিতি ভেঙে এখন চার ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। চার সংগঠনের আধিপত্য বিস্তারের কারণে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
সূত্র: রাইজিংবিডি.কম