প্রেমের অপরাধে মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক যুবককে ডেকে এনে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ।এই হত্যাকান্ডের সাথে ইউপি চেয়ারম্যান ও দুই মেম্বার জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত যুবকের নাম ইয়াসিন সরদার (২৫)। ইয়াসিন বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের পানবাড়িয়া এলাকার সিদ্দিক সরদারের ছেলে। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের লড়াইপুর গ্রামে সাইফুলের হাঁসের খামারে কাজ করতেন তিনি।
মেহেন্দীগঞ্জ থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার এসআই ইয়াকুব আলী জানান, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে ইয়াসিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার গলায় শিকল দিয়ে ফাঁস লাগানো ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, লড়াইপুর গুচ্ছগ্রামের এক স্বামী পরিত্যক্তার সঙ্গে ইয়াসিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের কারণে তারা প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় দেখা করতো।
সর্বশেষ গত বুধবার রাতে ইয়াসিন ও তার প্রেমিকা কথা বলার সময় স্থানীয় কয়েকজন ইউপি সদস্য তা দেখে ফেলে। বিষয়টি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদকে অবহিত করলে তার নির্দেশে রাতেই ইয়াসিনকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে আনে ইউপি সদস্যরা।
এরপর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার সালামসহ ৫ থেকে ৭ জন শিকল দিয়ে বেঁধে ইয়াসিনের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়। এ সময় ইয়াসিনের ডাক চিৎকার শুনে এলাকাবাসী ইউনিয়ন পরিষদ দেখতে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, লাঠি দিয়ে ৫/৭ জন মিলে নির্যাতন চালায় ইয়াসিনের ওপর।
নির্যাতনে ইয়াসিন জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ইউপি সদস্যরা তাকে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে বাড়ি চলে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামবাসী ইউনিয়ন পরিষদের কাছে ঘোরাঘুড়ি করে আর ইয়াসিনের অবস্থা দেখার জন্য যায়।
কিছুক্ষণ পর ইউপি সদস্যরা এসে গুদাম ঘর খুলে ইয়াসিনকে মৃত দেখতে পায়।
এদিকে, স্বামী পরিত্যক্তা ওই তরুণীর মা বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে ইয়াসিনের সম্পর্ক ছিল। মেম্বার হুমায়ুন ও তার সহযোগীদের নির্যাতনে ইয়াসিনের মৃত্যু হয়েছে।
অভিযুক্ত শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ মোল্লা জানান, ইয়াসিন আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বরিশাল নিউজ/এমএম হাসান