পিয়াস রায় । জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের মধুকাঠি গ্রামের বাসিন্দা সুখেন্দু বিকাশ রায়ের ছেলে। বরিশাল নগরীর নতুনবাজারস্থ মথুরানাথ পাবলিক স্কুল সংলগ্ন ভাড়া বাসায় বসবাস করেন তারা। নেপালে বেড়াতে গিয়েছিলেন পিয়াস। সেখানে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পিয়াসকে হারানোর আশংকায় গোটা এলাকা জুড়ে বিরাজ করছে স্তব্ধতা। স্বজনরা যেখান থেকে যে খবর পাচ্ছেন তা নিয়েই ছুটে আসছেন তাদের বাসায়।
পিয়াসের বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার চন্দ্রকান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মা পূর্ণা রানী মিস্ত্রি বরিশাল সরকারী পলিটেকনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে পিয়াস রায় বড়। বরিশাল জিলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে গোপালগঞ্জের শেখ সাবেরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন পিয়াস। ছাত্রজীবনে ওই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।
পিয়াসের মা পূর্ণা রানী মিস্ত্রি বলেন, গত ১১ মার্চ রাতে বরিশাল থেকে লঞ্চযোগে ঢাকায় যায় পিয়াস। সে সময় তিনি তার ছেলেকে লঞ্চঘাটে দিয়ে আসেন। ১২ মার্চ সকালে ঢাকায় চাচাতো ভাইয়ের বাসায় গিয়ে ওঠে পিয়াস। সেখান থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নেপালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে পিয়াস। তিনি আরও বলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পিয়াসের সাথে তার শেষ কথা হয়েছে। তখন পিয়াস জানিয়েছিলো, কিছুক্ষণের মধ্যে সে বিমানে উঠবে। এরপর আর তার সাথে কোনো যোগাযোগ হয়নি।
পিয়াসের ছোট বোন শুভ্রা রায় বলেন, পিয়াসের ১৬ মার্চ বেলা তিনটায় কাঠমান্ডু থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার কথা ছিলো। দুটি টিকিটই অগ্রিম কাটা ছিল তার।
পিয়াসের বোনজামাই শুসময় সরকার বলেন, পিয়াস এসএসসি পরীক্ষার পর থেকে অবসর সময়ে নানান জায়গায় ঘুরতে যেতেন। ইতোমধ্যে দেশের বাহিরে ভারতে ছয়বার ও নেপালে আরও দুইবার ভ্রমন করেছেন। কয়েকদিন আগে তার মেডিক্যাল কলেজের শেষবর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষা দিয়েই সে নেপাল ভ্রমনে যায়।
একমাত্র ছেলের এমন দুর্ঘটনায় দিশেহারা পিয়াসের বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় জানান, দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হয়েছেন পিয়াস ইউএস বাংলার ওই বিমানের যাত্রী ছিলো। আবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলেও পিয়াসের ছবি দেখানো হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই ভ্রমণ পিপাসু পিয়াস ছুটি পেলেই তিনি ঘুরতে বেরিয়ে পড়তো দেশ থেকে দেশান্তরে। সেই ভ্রমনেই সে এখন লোকান্তরে।
বরিশাল নিউজ/শামীম