পাতাল রেলের নির্মান কাজের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক অর্জিত হলো।
নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের পূর্বাচল সেক্টর ৪-এ পাতাল রেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন শেষে সুধীসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর আগে মেট্রোরেল উপহার দিয়েছি। মানুষ সেটির ওপর দিয়ে যাবে। এবার মাটির নিচ দিয়ে যাবে পাতাল রেল। বাংলাদেশে এ ধরনের আয়োজন প্রথম। আজকের অনুষ্ঠানে যারা এসেছেন সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। একটা জাতির জন্য এই সময় কিছুই না। তিনি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছরে আর কতটুকু করা যায়।’
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে এই বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এবার বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারেনি, পারবেও না।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এমআরটি লাইন ১-এর দুটি অংশ থাকবে— একটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত (বিমানবন্দর রুট) ১৯.৮৭২ কিলোমিটার অংশ। এটি হবে ভূগর্ভস্থ এবং এতে ১২টি স্টেশন থাকবে। অপর অংশটি নতুনবাজার থেকে প্রায় ১১.৩৭ কিলোমিটার এলিভেটেড লাইনসহ পূর্বাচল পর্যন্ত (পূর্বাচল রুট)। এতে সাতটি স্টেশন থাকবে।
অন্যদিকে বিমানবন্দর রুটের অংশ হিসেবে নতুনবাজার এবং নদ্দা স্টেশন হবে ভূগর্ভস্থ । বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জাইকা) এমআরটি লাইন ১-এর নির্মাণকাজের জন্য ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকার ব্যয়ভার বহন করবে।
এর মধ্যে জাইকা প্রকল্প সহায়তা (পিএ) হিসাবে দেবে ৩৯,৪৫০.৩২ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। জাপানি ফার্মের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম বিমানবন্দর-কমলাপুর-পূর্বাচল মেট্রো লাইন নির্মাণকাজ তদারকি করবে।
এর আগে ২০১৯ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৫২,৫৬১.৪৩ কোটি টাকায় এমআরটি লাইন-১ প্রকল্প অনুমোদন দেয়।
তিনি বলেন, ‘আপনারা আস্থা রাখতে পারেন (আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা) যে, জনগণ আমাদের সাথে আছে। কারণ, আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই জনগণ যতক্ষণ আমাদের সাথে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রাম করে কেউ কিছু করতে পারবেনা। ’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীক, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং বাংলাদেশে জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুছি তোমোহাইড। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক প্রকল্প পরিচিতি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে এমআরটি লাইন-১ এর ওপর একটি ভিডিও চিত্র এবং প্রকল্পের ওপর এটুআই নির্মিত একটি ‘থিম সং’ পরিবেশিত হয়।
বরিশাল নিউজ/ ডেস্ক নিউজ